খাগড়াছড়ি প্রতিদিন ডেস্ক
খাগড়াছড়িতে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার কারনে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে মাইকিং করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা। দুর্যোগ মোকাবেলায় সবধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। পাহাড়ি এলাকার সড়কে যানবাহন চলাচলকারীদের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার সতর্কতামূলক পরামর্শ সড়ক বিভাগের।

গত তিন দিন ধরে খাগড়াছড়ি জেলায় থেমে থেমে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের কারনে পাহাড় ধসের আশঙ্কা বেড়েছে, এমনটাই বলা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সচেতন ও সতর্ক থাকতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান।

শনিবার জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অতিবৃষ্টির ফলে পাহাড়ধস ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখে মাইকিং করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি তথ্য অফিসের মাধ্যমে সড়ক প্রচার কার্যক্রম চালানো হয়।

এ সময় শালবাগান, কলাবাগান, কুমিল্লাটিলা, সবুজবাগ এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ও নিম্মাঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে সচেতন ও সতর্ক করা হয়েছে।

পাহাড়ধসের শঙ্কা ছাড়াও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢলে শহরের বুক চিরে প্রবাহিত হওয়া চেঙ্গী নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। বাড়ে স্রেতের প্রবাহ। তলিয়ে যায় নদীর তীরবর্তী গ্রাম ও আশাপাশের ঘরবাড়ি। এ সময়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে ¯্রােতে ভেসে আসা গাছ-গাছালি ও লাকড়ি ধরতে নামেন। তাতে প্রতিবছরই মারা যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। এ বছর নদী তীরবর্তী ঐসব এলাকায়ও সচেতনমূলক মাইকিং করা হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর স্টেশন কর্মকর্তা রাজেশ বড়–য়া বলেন, স্থানীয় জনগণের ক্ষয়ক্ষতি ও জানমাল রক্ষায় সচেতন করতে শহরের বিভিন্নস্থানে মাইকিং করা হয়েছে। প্রতিবছরই বর্ষার মৌসুমে পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকে। এছাড়া পাহাড়ি ঢলে চেঙ্গী নদীর পানি বাড়ে। সেসময়টায় মানুষজন যাতে ঝুঁকি এড়িয়ে চলে সেই বিষয়ে সচেতন করতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে শহরের জেল গেইট ও নতুনকুঁড়ি এলাকায় গাছ উপড়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গাছ গুলো কেটে সরিয়ে নিয়েছে।

জেলা প্রশাসক সহিদুজ্জামান জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে পাশের দুই জেলা থেকে খাগড়াছড়িতে এর পরিমাণ কম হয়েছে। জেলায় পাহাড় ধসের আশঙ্কাও কম। তারপরও দুর্যোগ মোকাবেলায় সবধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। জেলার সকল অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি এলাকায় সড়কের ওপর পাহাড় ধসে পড়ার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি মাথায় রেখে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়ক বিভাগের ভ্রাম্যমান টিম কাজ করছে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ।

বৃষ্টির সময় পাহাড়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সতর্কতামূলক পরামর্শ খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান। তথ্য অফিস সুত্রে, জেলা সদরে ১০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানা গেলেও এখন পর্যন্ত সেখানে কোন লোকজন যায়নি।

খাগড়াছড়ি প্রতিদিন/ডিএইচ